School Service Commission

‘দাগি’ প্রার্থী বিতর্কে তোপের মুখে এসএসসি, ব্রাত্য বসুর অভিযোগ বিরোধীরা পরিকল্পিতভাবে বাধা দিচ্ছে

শিক্ষক নিয়োগে জট আরও বাড়ল। ২০১৬ প্যানেল বাতিলের ক্ষোভ, ‘দাগি’ তালিকা প্রকাশে উত্তেজনা। একের পর এক মামলা হাই কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কড়াকড়ি বাড়ছে, তবে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে।

ব্রাত্য বসু
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৩:১৬

শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জট কাটছে না। নতুন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে ২০১৬-র প্যানেল বাতিল হওয়ার ফলে চাকরি হারানো ‘যোগ্য’ প্রার্থীরাও ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের দাবি, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই পুনরায় নিয়োগ সম্পন্ন না হলে তাঁরা বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক মামলা উঠছে কলকাতা হাই কোর্টে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, বিষয়টির সব দিক বিবেচনা করেই সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। তাঁর অভিযোগ, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে শিক্ষক নিয়োগ ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিরোধীরা পরিকল্পিতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে।

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে ‘দাগি’ প্রার্থীদের নাম ইন্টারভিউ তালিকায় থাকার প্রসঙ্গ নিয়ে। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, যাঁরা ‘অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত, তাঁদের নাম কেন আবার তালিকায় উঠল তা স্পষ্ট করতে হবে। এর আগেই বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দিয়েছিলেন, চিহ্নিত ‘অযোগ্য’দের পূর্ণাঙ্গ তালিকা—নাম, ঠিকানা, পিতৃপরিচয়-সহ—প্রকাশ করতে হবে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বৃহস্পতিবারই সেই তালিকা প্রকাশের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এক সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, “শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই ওই তালিকা প্রকাশ করবে এসএসসি।” একই সঙ্গে তিনি জানান, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। সেই অনুযায়ী এসএসসি কাজ করছে।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি সংক্রান্ত সব মামলাই আবার কলকাতা হাই কোর্টে পাঠিয়ে দেয়। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ—একজন ‘দাগি’ প্রার্থীও যাতে কোনওভাবে চাকরিতে জায়গা না পান, বিশেষ ভাবে সক্ষম হলেও নয়। বিশেষ ভাবে সক্ষম একজন ‘দাগি’ প্রার্থীর নাম কেন ইন্টারভিউ তালিকায় রাখা হয়েছিল? প্রশ্ন উঠতেই মন্ত্রীর জবাব, এটি এসএসসি-র নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে নতুন পরীক্ষার্থীদের নিয়েও প্রশ্ন। এসএসসি-র নিয়োগবিধি নিয়েও আদালতের মন্তব্য রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, “আদালত তার পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে, কোনও রায় দেননি বিচারপতি। কী ভাবে কী হবে তা এসএসসি-র উপর ছেড়ে দিতে হবে।”

শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ফের আশ্বাস দিয়েছেন ২০১৬-র ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে থাকার বিষয়ে। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কোনও ‘যোগ্য’ প্রার্থীকে যাতে চাকরিহারা না হতে হয়, তা দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে শূন্যপদ বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে।”


Share