Dengue Update

নজরদারি বাড়িয়ে ডেঙ্গীতে রাশ দক্ষিণ দমদম পুরসভার

সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগের গ্রাফ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। যদিও এ বার ডিসেম্বরে পৌঁছেও কলকাতা, বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে ডেঙ্গি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পরেছে। ওই দুই পুর-এলাকার থেকে স্বাস্থ্য দফতরের এখনও রোজই ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর আসছে।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, দমদম
  • শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৬:৫৬

সচেতনতা বাড়িয়ে নজরদারি, ডেঙ্গিতে এ বার অনেকটা রাশ টানতে পারল দক্ষিণ দমদম। চলতি বছরের শুরু থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত কালিন্দী, লেকটাউন, বাঙুর, দমদম পার্ক, সাতগাছি, নাগেরবাজার এবং পূর্ব সিঁথি এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ১৬১ জন। গত বছর ওই একই সময়ে এই পুর-এলাকায় ডেঙ্গির রিপোর্ট পজিটিভি এসেছিল ৫৬৮ জনের। যা থেকে স্পষ্ট, গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য ভবনের খাতায় ডেঙ্গির হটস্পট হিসেবে প্রথম সারিতে থাকা দক্ষিণ দমদমের ডেঙ্গি পরিস্থিতি এ বার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগের গ্রাফ নিম্নমুখী হতে শুরু করে। যদিও এ বার ডিসেম্বরে পৌঁছেও কলকাতা, বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে ডেঙ্গি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পরেছে। ওই দুই পুর-এলাকার থেকে স্বাস্থ্য দফতরের এখনও রোজই ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর আসছে। সেখানে দক্ষিণ দমদমের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী ভাবে? গত কয়েক বছরে পুর দফতর এবং স্বাস্থ্য ভবনের একাধিক সমীক্ষায় ডেঙ্গির গ্রাফ উর্ধ্বমুখী হওয়ার নেপথ্যে যে কয়েকটি বিষয়কে দায়ী করা হয়েছিল, তার অন্যতম হলো ফাঁকা জমি এবং নির্মীয়মাণ আবাসনে মশার বাড়-বৃদ্ধি। ওই সমীক্ষার রিপোর্টে গুরুত্ব দিয়েই চলতি বছরের শুরু থেকে ফাঁকা জমি এবং নির্মীয়মাণ আবাসনে বাড়তি নজর রেখেছিলেন দক্ষিণ দমদম পুর-কর্তৃপক্ষ।

যে-সব জায়গা গত কয়েক বছরে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়িয়েছিল, এমন ১৫০০টি জায়গা জানুয়ারি মাসেই হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে ছিল ৩০০টি নির্মীয়মাণ আবাসন, ৬০৯টি ফাঁকা জমি, ২৯৬টি আবর্জনা ফেলার জায়গা। বাড়ি-বাড়ি অভিযানও চলেছে সমানতালে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বাগজোলা খাল সংলগ্ন এলাকায়। কারণ, খালের দু'পাড়ে ডেঙ্গির জন্যে দায়ী এডিস ইজিপ্টাই মশার বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি। নজরদারির জন্যে ওয়ার্ড-ভিত্তিক টিমও তৈরি করা হয়েছিল। ওই সব হটস্পটে জল জমে রয়েছে কি না, সে দিকেও শুরু থেকে নজর রেখেছিল টিম। সতর্ক করা হয়েছিল জায়গাগুলির মালিক বা আবাসিকদের।

দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের পুরসভাগুলির মধ্যে দক্ষিণ দমদম ডেঙ্গিপ্রবণ হিসেবে প্রথম সারিতে রয়েছে। ২০২২-এ এই পুর-এলাকায় ৩৫০০, ২০২৩-এ ১৭৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেঙ্গিতে। সেখানে চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০-র নীচে থাকাটাকে উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করছেন পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস। তাঁর কথায়, 'আক্রান্তের হিসেব থেকেই স্পষ্ট, ছোট পরিসরে জল জমা ঠেকাতে এবং বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজ পুর-কর্তৃপক্ষ ভালোই করেছেন।' দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন-ইন কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের কথায়, ‘মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমানোর কৃতিত্ব পুরকর্মীদের। কারণ, বছরভর মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি নজরদারিতেও তাঁরা কোনও খামতি রাখেননি।’


Share