SSC Update

কিউরেটিভ পিটিশন নিয়ে দিল্লিমুখী ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা, ফের পুরোনো চাকরি ফিরে পাওয়ার লড়াই

যোগ্য শিক্ষকদের নতুন লড়াই! ২০১৬–র চাকরি বাতিলের পর ফের সুপ্রিম কোর্টে কিউরেটিভ পিটিশন দাখিলের প্রস্তুতি। পুরোনো চাকরি ফেরত পেতে আজই দিল্লির পথে শিক্ষকরা।

সুপ্রিম কোর্ট
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০১:৫৩

২০১৬-র নিয়োগ–বাতিল হওয়া ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা আবারও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন। আজ, বৃহস্পতিবারই তাঁদের অনেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন কিউরেটিভ পিটিশন দাখিলের জন্য। তাঁদের দাবি—পুরোনো চাকরিটাই যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

গত ৩ এপ্রিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী স্কুল সার্ভিস কমিশন নবম–দশম ও একাদশ–দ্বাদশ স্তরের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়। কিন্তু একাদশ–দ্বাদশের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, বহু ‘নন–টেন্টেড’ বা তথাকথিত ‘যোগ্য’ শিক্ষক ডাকই পাননি। তাই আগের রায় সংশোধনের আর্জি জানিয়ে তাঁরা কিউরেটিভ পিটিশন করতে চাইছেন।

এই শিক্ষকদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে থাকলেও ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টারভিউ ডাক না–পাওয়া মানেই ডিসেম্বরের পর চাকরি হারানোর ঝুঁকি। তাই তাঁদের আর্জি—শীর্ষ আদালত যেন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি বিচার করে।

রাজ্য সরকার ও এসএসসি আগেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করলেও তা খারিজ হয়ে যায়। আদালত জানিয়ে দেয়—চূড়ান্ত রায়ে পরিবর্তনের অনুমতি নেই। তবুও ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা মনে করছেন, কিউরেটিভ পিটিশনে ন্যায়ের ব্যতিক্রম প্রমাণ করা সম্ভব। আইনজ্ঞদের মতে, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদালতে উপস্থাপিত না হওয়ায় যদি বিচার প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ঘটে, তবেই কিউরেটিভ পিটিশনের ভিত্তি তৈরি হয়।

এই শিক্ষকদের দাবি, রায়ের সময় কমিশন বা রাজ্য সরকার কেউই স্পষ্ট জানাতে পারেনি কতজন ‘টেন্টেড’ প্রার্থী ২০১৬ সালের প্যানেলে ছিলেন। ফলে পুরো প্যানেলই বাতিল হয়। অথচ এখন এসএসসি–র ভেরিফাই করা ‘টেন্টেড’ তালিকা তাঁদের হাতে রয়েছে। সেটাই আদালতের সামনে তুলে ধরে তাঁরা চান—যোগ্যদের চাকরি ফেরত দেওয়া হোক।

এক ‘যোগ্য’ শিক্ষকের দাবি, ১৭৫ জন ‘যোগ্য’ শিক্ষক নতুন পরীক্ষায় বসেও ইন্টারভিউ পায়নি। তার মধ্যে ১৪৮ জন ‘সিঙ্গল সাবজেক্ট’ শিক্ষক, যাঁরা নবম–দশম পরীক্ষাতেও বসতে পারেননি। ফলে ডিসেম্বরের পর তাঁদের চাকরি থাকবে না।

অন্যদিকে, ২০১৬–র ওয়েটিং লিস্টে থাকা ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থার তেমন কোনও বদল হয়নি। দীর্ঘ দিন আন্দোলনের পরও ২০২৫–এর নিয়োগে তাঁদের বেশিরভাগই চাকরি পাননি। নবম–দশমের ফলাফল এখনও প্রকাশ না হলেও তাঁরা খুব একটা আশাবাদী নন। শিক্ষক নিয়োগের দুই গোষ্ঠীর এই ভিন্ন বাস্তবতা আবারও ইঙ্গিত দিচ্ছে—২০১৬–র নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি।


Share