ED Raid On Alleged Sand Smuggling

অবৈধ ভাবে বালি পাচারের অভিযোগে রাজ্যের একাধিক জায়গায় ইডির অভিযান, রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ঠিকানায় তদন্তকারীরা

কলকাতা, ঝাড়গ্রাম-সহ মোট ২২টি ঠিকানায় ইডি অভিযান চালিয়েছে। অভিযোগ, নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে বেশি বালি তুলে পাচার করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করতে বিমা সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

মেদিনীপুর শহরে বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে ইডির অভিযান।
ইন্দ্রজিৎ মল্লিক, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৫৭

অবৈধ ভাবে তোলা বালি পাচারের তদন্তে কলকাতা-সহ রাজ্যের ২২টি জায়গায় অভিযান চালালেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকেরা। সোমবার ভোর রাত থেকে কলকাতা, সল্টলেক, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোট ২২টি ঠিকানায় ইডির আধিকারিকেরা তল্লাশি চালান। তাঁদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও ছিলেন। এ দিন ভোরে প্রায় একই সময়ে প্রতিটি জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত এই তল্লাশি চলেছে। কয়েক লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধারের পাশাপাশি বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সল্টলেকের জিডি মাইনিং নামের একটি সংস্থা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি বালি তুলে পাচার করেছে। অতিরিক্ত বালি বিক্রির টাকা পৌঁছে গিয়েছে প্রভাবশালীদের কাছে। এ ছাড়াও সেই টাকা বিমা সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন বিএলএলআরও এবং পুলিশের স্বতপ্রণোদিত হয়ে করা বেশ কিছু এফআইআরের একত্রিত করে ইডি ইসিআইআর করে। তার ভিত্তিতেই এ দিন অভিযান চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে। 

ইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্ধমান রেঞ্জের পুলিশ বেশ কয়েকটি বালির ট্রাক ধরে এফআইআর করেছিল। অভিযোগ ছিল, কলকাতাগামী বালির ট্রাক রাস্তায় চলতে জাল নথি ব্যবহার করছে। সেই সুত্রেই জিডি মাইনিং নামে একটি সংস্থার নাম সামনে আসে।

সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে একযোগে কলকাতা-সহ রাজ‍্যের ২২টি ঠিকানায় পৌঁছে যান। এ দিন তাঁরা সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে জিডি মাইনিংয়ের হেড অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। সেই সঙ্গে ইডির একটি দল এফই ব্লকের ওই সংস্থার কর্ণধার অরুণ শরাফের বাড়িতেও যায়। ওই সংস্থার ডিরেক্টর ধীমান চক্রবর্তীর কল্যানীর বাড়িতেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা যান। এর পাশাপাশি বেহালার সখেরবাজারে জিডি মাইনিংয়ের রেজিস্ট্রার্ড অফিস এবং রিজেন্ট কলোনিতে এক বিমা সংস্থার এজেন্টের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।

এ ছাড়াও মেদিনীপুরের সৌরভ রায় নামে এক বালি ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, সৌরভ ঝাড়গ্রামের লালগড়ে বালি খাদানের মালিক। জিডি মাইনিং সংস্থার আরও এক কর্মী জাহিরুল শেখের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে পরিবহণ ব‍্যবসায়ী দিলীপ প্রধানের বাড়িতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জাওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছেন ইডির আধিকারিকেরা।

রাজ্যের বিরোধী দলগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ ভাবে বালি পাচারের অভিযোগ করে আসছে। বালি পাচারের জন্য আর্থিক দুর্নীতিও হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার রাজ‍্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সৌরভ রায়ের সঙ্গে ভাইপোর যোগাযোগ রয়েছে। গোটা ঝাড়গ্রামে বাঁধগুলোকে কেটে বেচে দিয়েছে। এ অনেক বড় দুর্নীতি।” 

বিরোধী দলনেতার দাবি, সরকারের কাছে ২০ টাকা রাজস্ব আসছে। বাকি ৮০ টাকা এদের মাধ‍্যমে প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “এরা ওই এলাকার পুলিশের আধিকারিকদের দামি গাড়ি ভেট দিয়েছে।” তিনি এই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।


Share