High Court

হাই কোর্ট ক্লাবে নির্বাচনে বিজেপি ঝড়! ১০টির মধ্যে সাতটি আসনে জয়, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের লাভবান গেরুয়া শিবির

যদিও ওই আইনজীবী তথা সাংসদের বক্তব্য, “আমি ভোটের কোনও দায়িত্বে ছিলাম না। তবু সকলে মিলে যাতে ভোটটা করা যায়, সেই চেষ্টা করেছিলাম। এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং বর্তমানে লিগাল সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যা বলার বলতে পারবেন।”

হাই কোর্ট ক্লাবের নির্বাচনে জিতল বিজেপি।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৪:১৬

কলকাতা হাই কোর্ট ক্লাবের নির্বাচনে বিজেপি ঝড়। ১০টি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা জিতেছে। সভাপতি, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ আসনটি জিতে নিয়েছে তাঁরা। বাকি তিনটি আসন ভাগাভাগি করে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস মনোনীত দুই গোষ্ঠীর প্রার্থীরা। বিজেপি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে লাভ নিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

 

হাই কোর্টের আইনজীবী মহলের একাংশের মতে, ঘাসফুল শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে এ বারের ফলাফলে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আগামী বছরের ১৫ মার্চের আগে হবে কলকাতা হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন। সেই নির্বাচনেও এই ফলাফলের প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা হাই কোর্টে এই ফলাফলে গেরুয়া শিবির উচ্ছ্বসিত।

 

সূত্রের খবর, মাসখানেক আগে থেকে হাই কোর্ট ক্লাবের নির্বাচনে তৃণমূলপন্থীদের অফিশিয়াল ও বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর দু'টি প্যানেল নিয়ে তরজা শুরু হয়। সোমবার পরাজয়ের পরেও দু'পক্ষের সেই দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। জানা গিয়েছে, ভোটের আগে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, তৃণমূলের লিগাল সেলের সরকারি প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী শেষ মুহূর্তে নিজের প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করেন। 

 

এ দিন ফল প্রকাশের পরেই বিজেপিকে ভোট দেওয়া, তৃণমূলের মধ্যেই বিজেপির এজেন্ট থাকার মতোও অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের অফিশিয়াল প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা প্যানেল দিয়ে ভোটের আগেই বিতর্ক বাড়িয়ে তুলেছিলেন তৃণমূল লিগাল সেলের প্রাক্তন আহ্বায়ক তরুণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আইনজীবী মহলে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। হারের পরে তিনি সরাসরি দলের সাংসদ তথা প্রবীণ আইনজীবী কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমাকে শুধু দায়সারা ভাবে দু'একজনকে বাছতে বলা হয়েছিল। অথচ তিনি সরকারি প্যানেলে এমন লোকেদের রাখেন, যাঁদের মধ্যে কারোর ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। দলীয় কর্মীদের দাবিতে আমাদের আলাদা প্যানেল দিতে হয়েছিল। আমি নাম করে বলতে পারি, বর্তমান লিগাল সেলের অনেক সদস্য বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। বিজেপির হয়ে প্রচারও করেছেন।’’

 

যদিও ওই আইনজীবী তথা সাংসদের বক্তব্য, “আমি ভোটের কোনও দায়িত্বে ছিলাম না। তবু সকলে মিলে যাতে ভোটটা করা যায়, সেই চেষ্টা করেছিলাম। এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং বর্তমানে লিগাল সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যা বলার বলতে পারবেন।” 

 

আইনমন্ত্রীর বলেন, “আমি চার বছর লিগাল সেলের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমার আমলে যতবার ভোট ছিলাম। আমার আমলে যতবার ভোট হয়েছে, আমরা জিতেছি। এখন আর আমি দায়িত্বে নেই। ফলে চেয়ারম্যান যা বলার বলতে পারবেন।” যদিও হাই কোর্ট ক্লাবের এই ফলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ অর্থমন্ত্রী তথা লিগাল সেলের চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “সামান্য একটা ক্লাবের ভোট। সেখানে আইনজীবীরা খাওয়াদাওয়া করতে যান। এই ভোটে জিতে বিজেপি যদি আপ্লুত হয়, সেটা তাদের ব্যাপার।” এরই পাশাপাশি তরুণ চট্টোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করে চন্দ্রিমা বলেন, “আমাদের কারা নতুন প্যানেল দিয়েছেন, সেটা তাঁদেরই জিজ্ঞেস করুন।”

 

এই বিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আশা করি আইনজীবীদের কল‍্যাণে বারের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং পশ্চিমবঙ্গে ন‍্যায়বিচারের কন্ঠ শক্তিশালী করতে এই দল অক্লান্ত পরিশ্রম করবে।”


Share