Special Intensive Revision

বহুতল আবাসনে বুথ তৈরী নিয়ে ডিইও-দের কাজে অসন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মনে করিয়ে ফের সমীক্ষা করার নির্দেশ

আবাসনে বুথ তৈরির জন্য জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের (ডিইও) কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। সোমবার পর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাঠানোর সময়সীমা ছিল। পরে কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যায়। এ বার তারা এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল। তারা এ-ও জানিয়েছে, এর দায় নিতে হবে ডিইও-দের। এই নিয়ে নতুন সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৩২

বহুতল আবাসনগুলিতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তৈরি নিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের ভুমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। নতুন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নিয়ে কেন কোনও আবেদন জমা পড়েনি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল নির্বাচন কমিশন। এত বড় রাজ্য থেকে মাত্র দু’টি আবেদন জমা পড়ছিল। সেই তথ‍্যই কমিশনকে ভাবিয়েছে বলে খবর। কমিশন মনে করছে, এই বিষয়ে ডিইও-দের উদাসীন মনোভাব রয়েছে। রয়েছে সমীক্ষার অভাব। তা যে ভালো ভাবে নিচ্ছে না কমিশন, তা-এ চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।

বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়ালকে চিঠি কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি খুবই গুরুতর। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মনে করিয়ে দিয়ে কমিশন বলেছে, ডিইও-দের আইন মানা বাধ্যতামূলক। তাদের নির্দেশ, নতুন করে সমীক্ষা করার পর প্রস্তাবিত বুথের তালিকা জমা দিতে হবে। তা করতে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই। এই নির্দেশ অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন।

অতীতে কমিশন জানিয়েছিল, ২৫০টি বাড়ি অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন এমন বহুতল ভবন, গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, কলোনি, বস্তি এলাকা এবং গেটেড সোসাইটিতে নতুন ভোটগ্রহণ তৈরি নিয়ে সমীক্ষা করতে হবে। প্রস্তাবিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের তালিকা পাঠাতে বলেছিল কমিশন। ওই বিষয়ে গত সোমবার ছিল রিপোর্ট দেওয়ার শেষ দিন। সব জেলা মিলিয়ে মাত্র দু'টি রিপোর্ট পাঠায় ডিইও-রা। এতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিশন।

কমিশন জানিয়েছে, দু’বার বলা সত্ত্বেও কোনও নতুন ভোটকেন্দ্রের প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গে থেকে তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। এই বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে। কমিশনের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে জেলাশাসকদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলা রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় জায়গায় বুথ না হলে তার দায় জেলা ডিইও-দের নিতে হবে। 

কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভা ভিত্তিক খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওই তালিকা প্রকাশের পরে বহুতল ভবন, গ্রুপ হাউজিং সোসাইটি, আরডব্লিউএ কলোনি, বস্তি এলাকা এবং গেটেড সোসাইটিতে বুথ নিয়ে নতুন সমীক্ষা করতে হবে। সমীক্ষা করে ২৫০টি বাড়ি অথবা ৫০০ জন ভোটার রয়েছেন, এমন জায়গায় ভোটকেন্দ্র তৈরির প্রস্তাব আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে। সব ডিইও-দের এই নির্দেশ কঠোর ভাবে মানতে হবে।

কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে অভিজাত বহুতল আবাসনের সংখ্যা গত দু’দশকে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির হিসাব বলছে, কলকাতার ক্ষেত্রে এই বহুতলবাসীরা মোট ভোটের ৮-১০ শতাংশ। কিন্তু এই সব অভিজাত বহুতলবাসীদের অনেকেই ভোটের দিনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে যান না বলে অভিযোগ। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভাবনা ছিল, যে কোনও আবাসনে ৩০০-র বেশি ভোটার থাকলে সেই আবাসন চত্বরের ভিতরেই পৃথক ভোটকেন্দ্র তৈরি করে দেওয়া হবে।

আবাসনে বুথ তৈরির জন্য জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের (ডিইও) কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। সোমবার পর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাঠানোর সময়সীমা ছিল। পরে কমিশন সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে যায়। এ বার তারা এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল। তারা এ-ও জানিয়েছে, এর দায় নিতে হবে ডিইও-দের। এই নিয়ে নতুন সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।


Share